Read more
অমনি শোঁ শোঁ করিয়া উড়িতে উড়িতে শঙ্খচিল
তাঁর কাছে আসিয়া উপস্থিত হয়।
রাজকন্যা শঙ্খচিলের কাছে কাঁদিয়া বলেন—‘চিল্নী-মা,
আমি তো কাজকর্ম কিছুই জানি না। এখন উপায়?’
শঙ্খচিল বলে-‘ভয় কি? আমি সব করিয়া দিতেছি’।–এই
বলিয়া শঙ্খচিল রাজকন্যার সমস্ত কাজ করিয়া দিয়া চলিয়া যায়।
পরের দিন সদাগরের মা উঠিয়া দেখেন-কোন কাজই
বাকী নাই।
কিন্তু দিনের পর দিন এই রকম হয়, অথচ ছেলে বৌ
আগেও যেমন ছিল, এখনও তেমনিই, আছে-দেখিয়া সদাগরের মায়ের মনে সন্দেহ হইল। ঘরের পিছনে
লুকাইয়া রহিলেন, আর সেখানে লুকাইয়া থাকিয়া দেখিলেন-রাজকন্যা আর শঙ্খচিলের কাণ্ড।
তারপর ঘরে ফিরিয়া গিয়া তিনি মনে মনে আর এক ফন্দি আঁটিয়া রাখিলেন।
ইহার পর একদিন সদাগর বাহিরে গিয়াছেন, আর
রাজকন্যা নাইতে গিয়াছেন, সেই সুযোগে সদাগরের মা চুপে চুপে রাজকন্যার ঘরে গিয়া সুতা
ধরিয়া নাড়িয়া বলিতে লাগিলেন—
‘সুতাগাছটি নড়েচড়ে,
চিলনী মা আমার উড়িয়া পড়ে।
অমনি শোঁ শোঁ করিয়া উড়িতে উড়িতে শঙ্খচিল
রাজকন্যার ঘরে আসিয়া হাজির। সদাগরের মা-ও তখনই খপ্ করিয়া শঙ্খচিলকে ধরিয়া
ফেলিলেন। তারপর তাহাকে কাটিয়া কুটিয়া মাংস রাঁধিয়া রাখিলেন।
দুপুরবেলা রাজকন্যা খাইতে বসিয়াছেন, সদাগরের
মা বাটি ভরিয়া মাংস আনিয়া তাঁর পাতের কাছে দিলেন। রাজকন্যা হাতের গ্রাস মুখে
তুলিবেন, মাংসের গন্ধ নাকে যাইতেই চমকাইয়া উঠিলেন। তাঁর পাতের ভাত পাতে পড়িয়াই
রহিল। রাজকন্যা কাঁদিতে লাগিলেন—
‘এ কি খাইতে দিলেন, ঠাকরুন, এমন খাবার
কেমনে আজ খাই।
পাতের কাছে কেন আমার চিল্নী-মায়ের
গায়ের গন্ধ পাই’।
রাজকন্যার আর খাওয়া হইল না,--ছুটিয়া তিনি
ঘরে গিয়া সুতা ধরিয়া তিন-তিনবার নাড়া দিয়া বলিতে লাগিলেন—
0 Reviews