রাজকন্যা শঙ্খচিলের মনের ভাব বুঝিতে পারিয়া বলিলেন

রাজকন্যা শঙ্খচিলের মনের ভাব বুঝিতে পারিয়া বলিলেন

Author:
Price:

Read more

রাজকন্যা শঙ্খচিলের মনের ভাব বুঝিতে পারিয়া বলিলেন—‘চিল্‌নি-মা, তোমার কোলে আমি এত বড় হইয়াছি, এখন আবার কাহার কাছে যাইব। তোমাকে ছাড়িয়া আমি থাকিতে পারিব না’।
শঙ্খচিল রাজকন্যাকে বুঝাইয়া সাঝাইয়া রাজী করাইল।
রাজী হইয়া রাজকন্যা শঙ্খচিলকে বলিলেন-বেশ আমি সদাগরের সঙ্গে যাইব। কিন্তু যে ঘরে আমি থাকিব সেই ঘরের সঙ্গে আর তোমার বাসায় একগাছা সুতা বাঁধিয়া দিতে হইবে আমি সেই সুতায় তিনবার নাড়া দিয়া যখনই বলিব—
সুতাগাছটি নাড়েচড়ে
চিল্‌নী-মা আমার উড়িয়া পড়ে।–
তখনই কিন্তু তোমার দেখা পাওয়া চাই।
শঙ্খচিল বলিল—আচ্ছা।
সদাগরও বলিলেন—আচ্ছা।
ইহার পর সদাগর রাজকন্যাকে বিবাহ করিয়া দেশে লইয়া গেলেন।
দেশে গিয়া সদাগর রাজকন্যার কথামত তাঁর শোবার ঘরে আর শঙ্খচিলের বাসায় একগাছা সুতো বাঁধিয়া দিলেন।
সদাগর এখন হইতে দিনরাত রাজকন্যার ঘরেই থাকেন, ব্যবসা বাণিজ্যে আর মন নাই। ছেলের কাণ্ড দেখিয়া সদাগরের মা ভাবিয়া অস্থির—এমন হইলে ঘরসংসার চলে কি করিয়া।
সদাগরের মা ভাবিয়া চিন্তিয়া ঠিক করিলেন-বৌকে যাদি কাজে ব্যস্ত রাখা যায়, তাহলে ছেলের মনও কাজকর্মের দিকে ফিরিয়া যাইবে। ইহা ভাবিয়া সদাগরের মা ফরমাসের উপর ফরমাস দিয়া রাজকন্যাকে দিনরাত খাটাইবার ফন্দি করিলেন।
আজন্ম পাখীর বাসায় মানুষ। রাজকন্যা এত ফাই-ফরমাস খাটেন, সাধ্য কি? তার উপর কাজকর্মেরই বা তিনি জানেন কি।
সদাগরের মা আগের দিন শোবার আগে পরের দিনের কাজর ফরমাস করিয়া রাখেন। রাজকন্যা ঘরে গিয়া শঙ্খচিলের বাসায় বাঁধা সুতাগাছা ধরিয়া তিন-তিনবার নাড়া দিয়া বলেন—
‘সুতাগাছটি নড়েচড়ে,

চিল্‌নী-মা আমার উড়িয়া পড়ে’।

0 Reviews