‘সুতাগাছাটি নড়েচড়ে,

‘সুতাগাছাটি নড়েচড়ে,

Author:
Price:

Read more

‘সুতাগাছাটি নড়েচড়ে,
চিলনী মা আমার উড়িয়া পড়ে’।
কিন্তু কই, সুতা ধরিয়া যতই নাড়েন, শঙ্খচিল তো আসে না। রাজকন্যা এদিকে চান ওদিকে চান, দেখেন, গরভরা শঙ্খচিলের পালক। পালক দেখিয়া রাজকন্যার বুঝিবার বাকী রহিল না। পালকগুলি গুছাইয়া বুকে তুলিয়া লইয়া তিনি আছাড় খাইয়া কাঁদিতে লাগিলেন।
সদাগর ঘরে ফিরিয়া আসিয়া রাজকন্যার দশা দেখিয়া অস্থির।
ওরে, এই যে রাখিয়া গেলাম
তাজা পদ্মের কলি,
কোন্‌ কালো-ঝড় আসিল রে—
পড়িয়াছে ঢলি।
সদাগর রাজকন্যাকে কোলে তুলিয়া লইয়া নিজেও চোখের জলে বুক ভাসাইতে লাগিলেন।
সেই হইতে রাজকন্যা ভুঁইয়ে পড়িয়াই আছেন নানও না, খানও না, সদাগর কিছু বলিতে চাহিলে ডুকুরিয়া কাঁদিয়া উঠেন, বলেন-চিলনী মাকে আমার আনিয়া দাও, নইলে এ প্রাণ রাখিব না। রাজকন্যার সঙ্গে সঙ্গে সদাগরেরও নাওয়া-খাওয়া বন্ধ।
সদাগরের মা দেখিলেন—এ যে বিপদের উপর বিপদ হইল। ছেলে ব্যবসা-বাণিজ্য না করুক, প্রাণের তো ভয় নাই। এখন যে বৌয়ের সঙ্গে ছেলেও না খাইয়া মরিতে বসিয়াছে।
ছেলের মায়ায় মায়ের মনে সোয়াস্তি নাই। সদাগরের মা দেবতার দুয়ারে গিয়া ধরনা দিয়া পড়িয়া রহিলেন—দেবতা দয়া না করেন তো সেইখানেই শুকাইয়া মরিয়া থাকিবেন।

মানুষের মনের কথা দেবতার জানিতে দেরি হয় না। সদাগরের মায়ের মনের কথা জানিতে পারিয়া দেবতার দয়া হইল। তিনদিনের দিন সদাগরের মা স্বপ্ন পাইলেন—দুই মাসের পথের পর এক রাজপুরী আছে। সেখানে সাদা-ধবধবে দুধের রঙের জল এক দুধপুকুর আছে, শঙ্খচিলের পালক লইয়া রাজকন্যা সেই পুকুরে পূর্ণিমার রাতে নাইয়া উঠেন তো শঙ্খচিল জীয়ন্ত হইয়া উঠিবে।

0 Reviews