Read more
শ্রীমতী নেলী
সেনগুপ্তা
ভারতীয় জাতীয় মহাসভা।
বৃটিশ কর্তৃপক্ষ মহাসভার অধিবেশন বন্ধ ক
দিয়েছেন, জরুরী আইনের জোরে সভাসমিতি সব বন্ধ, গান্ধী জওহরলাল প্রভৃতি ভারতবরেণ্য
নেতারা কারারুদ্ধ।
আইন অমান্যের যুগ।
দেশের লোকেরাও কিন্তু জাতীয় মহাসভার অধিবেশন
করার জন্য বোর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যেমন করেই হোক এবার কংগ্রেসর অধিবেশন তারা করবেই।
ভিতরে ভিতরে সব ঠিক হয়ে গেল। পুলিশের দৃষ্টি
এড়াবার জন্য কোনরকম আয়োজনের বাহ্যিক আড়ম্বর করা হোল না।
ঠিক হোল এক ইংরাজ মহিলাকে সভানেত্রী করা
হবে।
সভানেত্রীর স্বামী তখন হাসপাতালে। বন্ধুরা
বললেন—ওসবের মাঝে এখন যেও না, তোমার স্বামী অসুস্থ, তুমি জেলে গেলে ছোট ছোট
ছেলেদুটিকে দেখাশুনা করবে কে?
কথাটি মহিলার মনে লাগলো না।
তিনি স্বামীর কাছে গেলেন উপদেশ নিতে। স্বামী
তখন মরণাপন্ন কিন্তু দেশের কাজ, তার উপর কংগ্রেসের সভানেত্রীর সম্মান, সানন্দে
তিনি সম্মতি দিলেন।
উনিশ-শো-তেত্রিশ সালের কংগ্রেস।
কলিকাতার ধর্মতলার ট্রাম কোম্পানীর
বিশ্রাম-আগারে বিকাল বেলা কংগ্রেসের সভা বসলো, মাত্র তিনশত কংগ্রেস কর্মী সেই সভায়
যোগ দিলেন।
ইংরাজ মহিলা আপাদমস্তক খদ্দরে ভূষিতা হয়ে
সভানেত্রীর আসন অলঙ্কৃত করলেন।
সভার সুরুতেই একে একে প্রস্তাব পাশ হতে
লাগলো।
খবর পেয়েই পুলিশ ছুটে এল। আধঘন্টার মধ্যে
লাঠি চালিয়ে তারা সভা ভেঙ্গে দিল, সভানেত্রীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল।
অবশ্য তিন দিন পরে সভানেত্রীকে পুলিশ ছেড়ে
দেয়।
ইংলণ্ডে জন্মগ্রহণ করে স্বাধীন দেশের মহিলা
হয়ে যিনি পরাধীন ভারতবাসীর সুখে দুঃখে নিজেকে এইভাবে মিশিয়ে দিয়েছেন, তিনি কে জান?
–দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহনের সহধর্মিনী নেলী সেনগুপ্তা।
0 Reviews