Read more
Lilavati
লীলাবতী
Jyotibidera glorious girl.
She was young widow. Many astronomers
without gana-verse can not prevent the widow.
She has been heard from the
Father-of-astrology-scripture reading. Seeing is to develop talent. And his
answer when the question daughter scholar, came anywhere.
When the girl came to see-or father to
come up with something to say-do parents think?
Bara difficult question mother.
Ki ball, hear?
Father of the girl, sitting on the
chalk, the solution is to look for. Father's smile blooms, the mother, has
succeeded in the Scriptures teach thee, play killed the Master Hole ....
Acharya wrote the book, and to help the
girl, the chancellor said khusi'll name this baikhanira Lilavati, what happened
mother.
Lilavati daughter. Father took
caranadhuli Lilavati respect.
Bhaskar Acharya became full of praise
for Lilavati, kanisthera think is going to excesses.
At the end of the day-to scholars
questioned said that acaryadeba, your daughter knows all gananai, which could
have a tree kacaguli page?
A very difficult problem. The father
said the scholars say that they do not accept you back, tell-apanara daughter
leaves to count? "
Can niscayai, but the tree, how high,
and how to say, before it has spread.
Scholars told trees.
Lilavati count replied.
Then one of the scholars of the leaves
when combined with the quality of the answer is not known, however, admitted
that they were falsely Lilavati its evidence-Lilavati reputation.
Lilavati
centuries later by winning the Indian scriptures have become immortal. History
of the world, and we do not know any girl to have much pleasure in astrology.
This is possible only in India.
লীলাবতী
প্রসিদ্ধ
জ্যোতিবিদের মেয়ে।
অল্পবয়সেই মেয়েটি
বিধবা হয়েছে। বহু গণা-গাথা করেও জ্যোতির্বিদ সে বৈধব্য রোধ করতে পারেন নি।
মেয়েটি পিতার
কাছে থেকে পড়া-শুনা করে চলেছে—জ্যোতিষ-শাস্ত্র। দেখতে দেখতে প্রতিভার বিকাশ হয়।
পণ্ডিত যখনই যা প্রশ্ন করেন তনয়া তখন তারই উত্তর দেয়, বাধে না কোথাও।
কখন-বা পিতাকে
কিছু চিন্তা করতে দেখলে মেয়ে এসে বললো—কি ভাবছ বলত বাবা?
--বড় দুরূহ
প্রশ্ন মা।
--কি বল না,
শুনি?
পিতা বলেন, মেয়ে খড়ি
নিয়ে বসে, অল্পক্ষণের মধ্যেই সমাধন হয়ে যায়। পিতার মুখে হাসি ফোটে, বলেন—মা,
সার্থক হয়েছে তোকে শাস্ত্র শেখানো, শেষে গুরু মারা বিদ্যে হোল।...
আচার্য বই লেখেন, মেয়ে
তাতে সাহায্য করেন, আচার্য খুসি হয়ে বলেন—এই বইখানির নাম দেব লীলাবতী, কি বলিস মা।
মেয়ের নাম লীলাবতী।
লীলাবতী শ্রদ্ধায় পিতার চরণধুলি গ্রহণ করেন।
লীলাবতীর প্রশংসায়
ভাস্কর আচার্য পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন, কনিষ্ঠেরা মনে করেন বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
শেষে একদিন এক পণ্ডিত
প্রশ্ন তোলেন—আপনি যে বলেন আচার্যদেব, আপনার মেয়ে সব গণনাই জানে, কোন্ গাছে
কচগুলি পাতা আছে বলতে পারে?
বড়ই কঠিন সমস্যা। পিতা
এসে বললেন—ওরা তোকে পণ্ডিত বলে মানতে চায় না, বললে—‘আপনার কন্যা গাছের পাতা গুণে
দিতে পারে?’
--নিশ্চয়ই পারি, তবে কি
গাছ, কত উঁচু আর কতখানি ছড়িয়ে আছে তা আগে বলতে হবে।
পণ্ডিতেরা গাছের কথা
জানালেন।
লীলাবতীও গণনা করে উত্তর
দিলেন।
তারপর পণ্ডিতেরা সেই
গাছের পাতাগুলি এক একটি করে গুণে উত্তরের সাথে মিলিয়ে দেখলেন কিনা জানা নেই, তবে
লীলাবতীর পাণ্ডিত্য যে তাঁরা স্বীকার করেছিলেন, তার প্রমাণ—লীলাবতীর খ্যাতি।
শতাব্দীর পর শতাব্দী কাল
জয় করে লীলাবতী অমর হয়ে আছে ভারতের শাস্ত্রে। পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোন মেয়ে
জ্যোতিষশাস্ত্রে এমন দেশবরেণ্য হয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। এ শুধু ভারতেই সম্ভব।
Uvay Bharti
Decoration of the greatest scholars of uttarapathera pitrsraddha Mishra,
a monk came to the gate and told the doorkeeper cropped head, neck is upabita.
Writing sraddhakale see monks funeral is spoiled, said embellishment
will not say now.
But the monks did not sunlena saying, without anumatitei stood inside,
said the preacher, I advaita Vedanta, I come to you sastrabicara, my disciple
if you are defeated, uttarapathe my commentary will last forever.
Embellishment was surprised. Young monks, solara years of age will not
be more than the he wants to follow. Draw a smile on the face of the bypass,
said: Well, today is the end of the ceremony, and tomorrow will be judged.
Mahismati to see the city was stirred. The next meeting of the city, and
wept panditamandali.
Uttarapatha and deccan dbigbijayi two scholars took the seat in front of
each other and Shankar Acharya mixed-embellishment.
The trial will start, but it is not settled? Everyone looked at the
faces he sees a judge can sit Decoration-wise, there comes one of the Brahmins.
Confirmation? At the end of your wife Saraswati Devi Shankar-unique scholarship
heard of him, I admit I was the mediator.
Embellishment my wife said, he can favor upon me.
Shankar smiled and said: No, he did not have to fear.
At the meeting, to take the seat of the goddess Saraswati zenana Hole,
Hole began judging controversy.
Day after day, the trial continues. At noon on him for a while Saraswati
Devi 'll be able to prepare food for her husband, retired-go, tell his hand
when he was a queen aisbaryabati. Then he came and sat in judgment.
Eighteen days spent on each end, you can not embellishment. Saraswati
sannyasi said, lies hole to win.
Decoration took Shankara fellowship.
Saraswati said monks came from the bench, and I want to be devoted
bhagabat Making.
Panditamandalira assembled thanks to the Lord stood trial so large that
they did not listen to any more nirapeksya combination. Sona riverbanks
bisnumitra scholar, who made her way siksita sarbasastre. Saraswati has
succeeded him names.
The discussion centers across India Shankar said. Deccan srngeyi
monastery was established All-chief as the goddess Saraswati. Monastery named
after him saradapitha Hole.
This is another name for the two-Bharati debirai Saraswati. Learning
from him in the midst of great splendor was continuing. Badheni to cooking for
her husband every day, and all the things that he did not leave the convent
sankita keep themselves - the Indian education.
উত্তরাপথের সর্বশ্রেষ্ঠ
পণ্ডিত মণ্ডন মিশ্রের পিতৃশ্রাদ্ধ, দ্বারী এসে জানালো—দ্বারে এক সন্ন্যাসী এসেছেন—মাথা
মুণ্ডিত, গলায় উপবীত নেই।
শাস্ত্রে আছে
শ্রাদ্ধকালে সন্নাসী দেখলে শ্রাদ্ধ পণ্ড হয়, মণ্ডন বললেন—বলে দাও এখন দেখা হবে না।
কিন্তু সন্ন্যাসী সেকথা শুন্লেন
না, বিনা অনুমতিতেই ভিতরে এসে দাঁড়ালেন, বললেন—আমি বেদান্তের অদ্বৈতবাদের প্রচারক,
আমি আপনার কাছে শাস্ত্রবিচার করতে এসেছি, আপনি পরাজিত হয়ে আমার শিষ্যত্ব গ্রহণ
করলে, উত্তরাপথে আমার ভাষ্য চিরস্থায়ী হবে।
মণ্ডন বিস্মিত হলেন।
কিশোর সন্ন্যাসী, বয়স বছর ষোলর বেশী হবে না, এ তাঁকে শিষ্য করতে চায়। মুখে
উপেক্ষার হাসি ফুটে উঠলো, বললেন—বেশ, আজ শ্রাদ্ধ শেষ করি, কাল বিচার হবে।
দেখতে দেখতে মাহিষ্মতী
নগরে সাড়া পড়ে গেল। পরদিন সারা শহরের পণ্ডিতমণ্ডলী ভেঙ্গে পড়লেন বিচার সভায়।
উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথের
দু’জন দ্বিগ্বিজয়ী পণ্ডিত পরস্পরের সামনে আসন গ্রহণ করলেন—মণ্ডন মিশ্র ও শঙ্কর
আচার্য।
এবার বিচার শুরু হবে,
কিন্তু মিমাংসা করবেন কে? সকলের মুখের পানে তাকিয়ে দেখেন মণ্ডন—বিচারকের আসনে বসতে
পারেন এমন জ্ঞানী সমাগত ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজনও নেই। তা’হলে? শেষে শঙ্কর বললেন—আপনার
স্ত্রী সরস্বতী দেবী অনন্য সাধারণ পাণ্ডিত্য বলে শুনেছি, তাঁকেই আমি মধ্যস্থ
মানছি।
মণ্ডন বললেন—তিনি আমার
স্ত্রী, তিনি তো আমার উপর পক্ষপাত করতে পারেন।
শঙ্কর মৃদু হেসে বললেন—না,
সে ভয় আমার নেই।
সরস্বতী দেবীকে অন্তঃপুর
থেকে এসে সভার মাঝে আসন নিতে হোল, সুরু হোল বিতর্ক বিচার।
দিনের পর দিন ধরে বিচার
চলতে থাকে। তারই মাঝে প্রতি মধ্যাহ্নে সরস্বতী দেবী কিছুক্ষণের জন্য অবসর নেন—স্বামীর
জন্য আহার্য প্রস্তুত করচে যান, রাণীর মত ঐশ্বর্যবতী হয়েও এটুকু তিনি নিজের হাতেই
করেন। তারপর আবার তিনি এসে বসেন বিচারকের আসনে।
একে একে আঠারো দিন কাটে,
শেষে মণ্ডন আর পারেন না। সরস্বতী বলেন –সন্ন্যাসী, তোমারই জয় হোল।
মণ্ডন শঙ্করের শিষ্যত্ব
গ্রহণ করিলেন।
সরস্বতী বিচারকের আসন
থেকে নেমে এসে বললেন—সন্ন্যাসী, আমি ভগবৎ সাধনায় নিরত হতে চাই।
সমবেত পণ্ডিতমণ্ডলীর
মধ্যে ধন্য ধন্য রব উঠলো, এতো বড় বিচারের এমন নিরপেক্ষ্য সমাহার আর কোন দিন তাঁরা
শোনেন নি। শোণ নদীর তীরের পণ্ডিত বিষ্ণুমিত্র, যিনি মেয়েকে এমনভাবে সর্বশাস্ত্রে
শিক্ষিতা করে তুলেছিলেন। সার্থক হয়েছে এঁর সরস্বতী নাম।
শঙ্কর তখন সারা ভারতে
শাস্ত্র আলোচনার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। দক্ষিণাত্যের শৃঙ্গেয়ী মঠের সর্ব-প্রধানার
পদে তিনি সরস্বতী দেবীকে প্রতিষ্ঠিত করলেন। এঁর নামানুসারে এই মঠের নাম হোল
সারদাপীঠ।
এই সরস্বতী দেবীরই আর এক
নাম ছিল উভয়-ভারতী। অগাধ ঐশ্বর্যের মাঝে থেকেও জ্ঞানচর্চা এঁর অব্যাহত ছিল।
স্বামীর জন্য প্রতিদিন রন্ধন করতেও বাধেনি, আবার সব কিছু ছেড়ে সন্ন্যাসিনী সাজতেও
শঙ্কিতা হননি এতটুকু,--এই ভারতের শিক্ষা।
Durgabati
Narmada river in half krosa garanagara, twelve miles away from there in a narrow gorge, two huge rocks in the road, so the show is still the queen of the stone is ranadanka durgabatira.
Four hundred years, people have to remember whom she was the wife of Shah durgabati dalapat garamandalera widow queen.
Biranarayana childish led to the prince's mother states that the commander of Emperor Akbar Khan Asaf garamandala attacked. Mother and son had his stoppage of several thousand soldiers.
Asaf Khan began to retreat.
Day evening the soldiers chased after the queen said, I want to rest.
The rest of the enemy was not the end, but he looked at the faces of the sick soldiers say 'no' did not.
Asaf Khan heavy army attacked her last night. Hole in the facility, but has already arrived in the morning, his gun. The front of the queen's army bombshell became upset.
Hole biranarayana injured prince, durgabati but was not sick, his forces were ready to take picheye a convenient place, but moved to the morning light, he saw that the back of the hill, where a narrow river, the rivers in the form of night-morning the soldiers it can not easily be crossed, the fight will be fought eparei.
Already an arrow in the eye bimdhalo queen, would have pulled out, but could not, however, continued to fight.
Mughal bahinira cannon to eliminate all the soldiers came forward, her injuries were bloody body, whole body was shaking the Thar Thar. There is no hope of victory, let us look mahout said: queen of the elephants?
Parajaya compliance will flee? Ranima smiled-subjugation better than death.
Mahout arm drag sharp taloyarakhani delena putting his chest.
He was almost four hundred years ago, but today they have become immortal tale.
দুর্গাবতী
নর্মদা নদীর তীরে আড়াই
ক্রোশ অন্তরে গড়নগর, সেখান থেকে বারো মাইল দূরে এক সঙ্কীর্ণ গিরিসঙ্কট, সেই পথের
মুখে দুই প্রকাণ্ড পাথর পড়ে আছে, তাই দেখিয়ে আজও বলা হয় রাণী দুর্গাবতীর রণডঙ্কা
পাষাণ হয়ে গেছে।
চারশো বছর ধরে জনগণ
যাঁকে স্মরণ করছে, তিনি ছিলেন গড়মণ্ডলের বিধবা রাণী দলপৎ শাহের স্ত্রী দুর্গাবতী।
রাজকুমার বীরনারায়ণ
ছেলেমানুষ বলে মা রাজ্য চালাচ্ছিলেন, এমন সময় সম্রাট আকবরের সেনাপতি আসফ খাঁ
গড়মণ্ডল আক্রমণ করলো। মা ও ছেলে কয়েক হাজার সৈন্য নিয়ে তার গতিরোধ করলেন।
আসফ খাঁ পিছু হটতে শুরু
করলো।
সারাদিন তাড়া করে যাবার
পর সন্ধার সময় সৈন্যরা বললো রাণীমা, এবার বিশ্রাম চাই।
শত্রুর শেষ না করে
বিশ্রাম করার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু সৈন্যদের শ্রান্ত মুখের পানে তাকিয়ে তিনি ‘না’
বলতে পারলেন না।
শেষ রাত্রে রাণীর
তন্দ্রাতুর সেনাদলকে আসফ খাঁ আক্রমণ করলো। প্রথমে বিশেষ সুবিধা হোল না, কিন্তু
ইতিমধ্যে সকাল বেলা তার কামান এসে পৌঁছালো। সেই কামানের গোলার সামনে রাণীর সেনা
বিপর্যস্ত হয়ে উঠলো।
রাজকুমার বীরনারায়ণ আহত
হোল, দুর্গাবতী কিন্তু কাতর হলেন না, নিজ বাহিনীকে একটা সুবিধাজনক স্থানে পিছেয়ে
নিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত হলেন, কিন্তু সরে আসতে গিয়ে প্রভাতী আলোয় তিনি দেখলেন যে
পিছনে যেখানে একটি সঙ্কীর্ণ পাহাড়ী নদী ছিল, রাত্রি-প্রভাতে সেটি এমন স্রোতস্বতীর
রূপ নিয়েছে যে সৈন্যরা সহজে তা পার হতে পারবে না, লড়তে হলে এপারেই লড়তে হবে।
ইতিমধ্যে একটি তীর এসে
রাণীর চোখে বিঁধলো, টেনে বের করতে চাইলেন কিন্তু পারলেন না, তথাপি লড়াই চললো।
মোগল বাহিণীর কামানের
সামনে সব সৈন্য নির্মূল হয়ে এলো, আঘাতে আঘাতে রাণীর দেহ রক্তাক্ত হয়ে গেল, সারা
দেহ থর থর করে কাঁপতে লাগলো। যুদ্ধ জয়ের আশা আর নেই, মাহুত বললো—এবার হাতী ফেরাই
রাণীমা?
--পরাজয় মেনে পালিয়ে
যাব?—রাণীমা হাসলেন—পরাধীনতার চেয়ে মৃত্যুও ভালো।
মাহুতের হাত থেকে ধারালো
তলোয়ারখানি টেনে নিয়ে বসিয়ে দেলেন নিজের বুকে।
সে আজ প্রায় সাড়ে চারশো
বছর আগের কথা, কিন্তু আজও সেই কাহিনী অমর হয়ে আছে।
Of South India.
Dark night. In the ecosystem silent, motionless. Everyone was asleep in the house. In the house, the wife silently revolving door to door, and he wants to escape from here, but do not open the door, locked.
But she palabei.
He jumped down from the top of the fell.
Then he inquired urddhasbase dark path.
Jump to read the words, many houses were broken up, what next? There he saw the husband and wife in bed - Where?
Hole calls.
Hole searched.
No wife.
Can be found around the dawn of the hunt.
Then she took the path of Vrindavan. Krishna said that the song is a prantara, hearing the noise of the people who were behind. He wondered if they are in search of, bauti became restless. Has no desire to return home. He will go to Vrindavan volition congenital bhaktisadhana the benefits received today, but it is not strong enough to leave the mind. I was eager to trick the eyes of men. Where hide, you can see as far as the field is empty.
There were eyes like a dead camels. She soon fell into the camel's stomach. That intense durgandha-rotten tripe.
For malodor men came together.
After they had gone, she went to bed again, Vrindavan.
By the end of the day he really came about pathakasta Vrindavan.
The girl was not a jurist scholar. Calala ideas and devoted to his pursuit.
Vrindavan soon as prima sadhika karemati Bai names were spread all over India.
He was under the tree to live. South Indian mother came a king, asking for you to make a cottage?
Na's father, he do not need to have a cottage on the ground, many of those who have survived, living insects will die, but I would not want to
King, however, would have to build a cottage. He spent the rest of your lives kutirei karemati Bai.
Vrindavan elders still have to wake up those memories.
Pursuit of enjoyment of life, voluntarily left indwelling transcendental possible only in India, luxury Earth so big that the instincts of the human mind, and nowhere My special.
Karematibai
Of South India.
Dark night. In the ecosystem silent, motionless. Everyone was asleep in the house. In the house, the wife silently revolving door to door, and he wants to escape from here, but do not open the door, locked.
But she palabei.
He jumped down from the top of the fell.
Then he inquired urddhasbase dark path.
Jump to read the words, many houses were broken up, what next? There he saw the husband and wife in bed - Where?
Hole calls.
Hole searched.
No wife.
Can be found around the dawn of the hunt.
Then she took the path of Vrindavan. Krishna said that the song is a prantara, hearing the noise of the people who were behind. He wondered if they are in search of, bauti became restless. Has no desire to return home. He will go to Vrindavan volition congenital bhaktisadhana the benefits received today, but it is not strong enough to leave the mind. I was eager to trick the eyes of men. Where hide, you can see as far as the field is empty.
There were eyes like a dead camels. She soon fell into the camel's stomach. That intense durgandha-rotten tripe.
For malodor men came together.
After they had gone, she went to bed again, Vrindavan.
By the end of the day he really came about pathakasta Vrindavan.
The girl was not a jurist scholar. Calala ideas and devoted to his pursuit.
Vrindavan soon as prima sadhika karemati Bai names were spread all over India.
He was under the tree to live. South Indian mother came a king, asking for you to make a cottage?
Na's father, he do not need to have a cottage on the ground, many of those who have survived, living insects will die, but I would not want to
King, however, would have to build a cottage. He spent the rest of your lives kutirei karemati Bai.
Vrindavan elders still have to wake up those memories.
Pursuit of enjoyment of life, voluntarily left indwelling transcendental possible only in India, luxury Earth so big that the instincts of the human mind, and nowhere My special.
করেমতিবাঈ
দক্ষিণ ভারতের কথা।
অন্ধকার রাত। চারিপাশ
নিস্তব্ধ, নিঝুম। বাড়ীর সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। এমন সময় বাড়ীর বউ চুপি চুপি দরজায়
দরজায় ঘুরছে, এখান থেকে সে পালিয়ে যেতে চায়, কিন্তু দরজা খোলা পাচ্ছে না, সব তালা
বন্ধ।
মেয়েটি কিন্তু পালাবেই।
শেষে উপরের ঘর থেকে সে
নীচে লাফিয়ে পড়লো।
তারপরই অন্ধকার পথ দিয়ে
সে ছুটলো ঊর্দ্ধশ্বাসে।
লাফিয়ে পড়ার শব্দে বাড়ীর
অনেকেরই ঘুম ভেঙে গেল, কি হোল? স্বামী দেখলেন স্ত্রী বিছানায় নেই,--কোথায় গেল?
ডাকাডাকি হোল।
খোঁজাখুঁজি হোল।
বউ নেই।
ভোর হতে না হতে চারিদিকে
লোক বাহির হয়ে পড়লো।
মেয়েটি তখন বৃন্দাবনের
পথ ধরেছে। নিশ্চিন্ত মনে কৃষ্ণনাম গান করতে করতে একটি প্রন্তর পার হচ্ছে, এমন সময়
পিছনে জন-কোলাহল শুনেত পেল। ওরা হয়তো তারই সন্ধানে আসছে ভেবে, বউটি চঞ্চল হয়ে
উঠলো। ঘরে ফেরার ইচ্ছা তার নেই। আজন্মের সাধ বৃন্দাবনে গিয়ে সে ভক্তিসাধনা করবে, সেই
সুবিধা আজ যখন পেয়েছে, তখন তা ছাড়তে আর মন সরলো না। লোকগুলির দৃষ্টিকে ফাঁকি দেবার
জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলো। কিন্তু কোথায় লুকোবে, যত দূর চোখ যায় ফাঁকা মাঠ।
চোখ পড়লো একটি মরা উট
পড়ে আছে। মেয়েটি তাড়াতাড়ি সেই উটের পেটের মধ্যে ঢুকে পড়লো। পচা নাড়ীভুঁড়ির তীব্র
দুর্গন্ধ।–তা হোক।
দুর্গন্ধের জন্য লোকগুলি
সেদিকে এলো না।
তারা চলে যাবার পর
মেয়েটি আবার বৃন্দাবনের পথ ধরলো।
পথকষ্ট শেষ করে সত্যই
একদিন সে বৃন্দাবনে এসে পৌঁছলো।
পণ্ডিতের মেয়ে
শাস্ত্রজ্ঞান কম ছিল না। তার উপর চললা ধ্যান ধারণা ও ভক্তি সাধনা।
অল্পদিনের মধ্যেই
বৃন্দাবনের প্রধানা সাধিকা হিসাবে করেমতি বাঈয়ের নাম সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়লো।
গাছতলায় তিনি দিনযাপন
করতেন। দক্ষিণ ভারতের একজন রাজা এসে বললেন—মা, তোমার জন্য একটি কুটির তৈরী করিয়ে
দিই?
--না বাবা, তার দরকার
নেই, কুটির করাতে হলে মাটির বুকে আশ্রয় নিয়ে যারা বেঁচে আছে এমন অনেক পোকামাকড়
মারা যাবে, তা আমি চাই না—
রাজা তথাপি কুটির তৈরী
করিয়ে দিলেন। সেই কুটিরেই করেমতি বাঈ বাকী জীবনটা কাটিয়ে দেন।
বৃন্দাবনে লোকমুখে সেই
স্মৃতি আজও জেগে আছে।
জীবনের সুখভোগকে
স্বেচ্ছায় ত্যাগ করে দেহাতীত অন্তর্যামীর সাধনা শুধু ভারতেই সম্ভব, বিলাসী পৃথিবীর
বুকে এতো বড় আদর্শ আর কোথাও মানুষের মনে সহজাত হয়ে জাগেনি।
The response to the court said. Emperor of India, said the elderly Mrs. baike court will send the court. Srimati poetic fame reached his ears, badsa want to become familiar with him directly.
Shahenshah requests, which means none of the orders of the king, and said Indrajit, I can not save this order, Mrs. prabinake I do not send in Delhi.
Kajata be a good king?
Dekha asked.
King Indrajit answer to your request, sent-I did not, you will forgive nijagune.
What is a small state like sundelakhandera, so that defy the king, dillisbarera ignores the request?
Came to the emperor-king Indrajit million fine, and within days, the money will be sent to the court of Delhi.
The Indrajit was in trouble, the poet kesabadasake sent to Birbal. Birbal was pleased with the efforts of the emperor, the king forgave indrajitke, the size was fine, but there was to be a poet prabinake Delhi court.
Converse with him were heavy khusi Emperor. Spent a few days with Mrs. bundelakhande badsara happiness atithye returned.
Emperor Akbar had a poet's presence is worth a million coins, and in favor of women in India on behalf of the poet of great pride.
Prabinabai
The response to the court said. Emperor of India, said the elderly Mrs. baike court will send the court. Srimati poetic fame reached his ears, badsa want to become familiar with him directly.
Shahenshah requests, which means none of the orders of the king, and said Indrajit, I can not save this order, Mrs. prabinake I do not send in Delhi.
Kajata be a good king?
Dekha asked.
King Indrajit answer to your request, sent-I did not, you will forgive nijagune.
What is a small state like sundelakhandera, so that defy the king, dillisbarera ignores the request?
Came to the emperor-king Indrajit million fine, and within days, the money will be sent to the court of Delhi.
The Indrajit was in trouble, the poet kesabadasake sent to Birbal. Birbal was pleased with the efforts of the emperor, the king forgave indrajitke, the size was fine, but there was to be a poet prabinake Delhi court.
Converse with him were heavy khusi Emperor. Spent a few days with Mrs. bundelakhande badsara happiness atithye returned.
Emperor Akbar had a poet's presence is worth a million coins, and in favor of women in India on behalf of the poet of great pride.
প্রবীণাবাঈ
রাজসভায় সাড়া পড়ে গেছে।
ভারত-সম্রাট জানিয়েছেন, সভাকবি শ্রীমতী প্রবীণা বাঈকে তাঁর দরবারে পাঠাতে হবে।
শ্রীমতীর কাব্য-খ্যাতি তাঁর কানে এসে পৌঁছেছে, বাদ্শা তাঁর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে
পরিচিত হতে চান।
শাহেনশাহের অনুরোধ, মানে
আদেশ রাজা ইন্দ্রজিৎ বললেন –হোক আদেশ, আমি এই আদেশ রক্ষা করতে পারবো না, শ্রীমতী
প্রবীণাকে আমি দিল্লীতে পাঠাবো না।
--কাজটা কি ভালো হবে
মহারাজ?
--দেখা যাক্।
রাজা ইন্দ্রজিৎ উত্তর
পাঠালেন—আপনার অনুরোধ রাখতে পারলাম না বলে দুঃখিত, আপনি নিজগুণে ক্ষমা করবেন।
কী, সুন্দেলখণ্ডের মত
একটা ছোট রাজ্য, তার রাজার এতদূর স্পর্ধা যে, দিল্লীশ্বরের অনুরোধ উপেক্ষা করে?
সম্রাটের আদেশ এসে
পৌঁছালো—রাজা ইন্দ্রজিতের দশলক্ষ মুদ্রা অর্থদণ্ড হয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই ওই টাকা
দিল্লীর দরবারে পৌঁছে দিতে হবে।
এবার ইন্দ্রজিৎ বিপদে
পড়লেন, কবি কেশবদাসকে পাঠালেন বীরবলের কাছে। বীরবলের চেষ্টায় সম্রাট প্রসন্ন হলেন,
রাজা ইন্দ্রজিৎকে ক্ষমা করলেন, জরিমানা মাপ হয়ে গেল, তবে কবি প্রবীণাকে দিল্লীর
দরবারে উপস্থিত হতে হোল।
সম্রাট তাঁর সাথে
বাক্যালাপ করে ভারী খুসি হলেন। কয়েকদিন বাদ্শার আতিথ্যে পরম সুখে অতিবাহিত করে
শ্রীমতী বুন্দেলখণ্ডে ফিরে এলেন।
সম্রাট আকবর এক কবির
উপস্থিতির মূল্য ধরেছিলেন দশ লক্ষ মুদ্রা, ভারত-নারীর পক্ষে এবং কবির পক্ষে এ বড়
গৌরবের কথা।
Such was the queen citora Mirabai anupranita ideals. Bhakti-expression seemed to win a luxury-appeal. One went to the queen leaves the palace city, kirtan.
There was a great cry in the State, with the queen mother sang about on the street. He is a wonderful voice, da abese eyes water formed was bastrapranta dhulidhusara, a heavenly face Sri. All calls up the tunes, old boy, all come back to queen.
Atisayye da queen-mother fell murcchita became restless people in his service on the route.
King became angry and not-so devotion. Queen of the ordinary people in the street would go.
No pardon for the king and queen gave orders to ghost-nadijale paksye situation ...
The queen-mother of the king ruled threw himself into the river.
But his death hole, the stream and reached the bank of the unconscious.
Then went harinam Mira sing, Vrindavan, sarapathe bloodstream surge was exaggerated. Vrindavan came with him was a great janasangha. Mira-formed community. Still, they are a cult of Radha-Krishna miradebira.
Mirabai
Now's the rough heard biliti ideals of communism, but the balance was ringing. Two and a half thousand years ago, Buddha teachings and ideals of the revolution that brought these ideologies cintarajye country would take the path of the dust, the queen was nun.Such was the queen citora Mirabai anupranita ideals. Bhakti-expression seemed to win a luxury-appeal. One went to the queen leaves the palace city, kirtan.
There was a great cry in the State, with the queen mother sang about on the street. He is a wonderful voice, da abese eyes water formed was bastrapranta dhulidhusara, a heavenly face Sri. All calls up the tunes, old boy, all come back to queen.
Atisayye da queen-mother fell murcchita became restless people in his service on the route.
King became angry and not-so devotion. Queen of the ordinary people in the street would go.
No pardon for the king and queen gave orders to ghost-nadijale paksye situation ...
The queen-mother of the king ruled threw himself into the river.
But his death hole, the stream and reached the bank of the unconscious.
Then went harinam Mira sing, Vrindavan, sarapathe bloodstream surge was exaggerated. Vrindavan came with him was a great janasangha. Mira-formed community. Still, they are a cult of Radha-Krishna miradebira.
মীরাবাঈ
এখনকার মত বিলিতি আদর্শে
সাম্যবাদের কথা তখনও ভারতের পথেঘাটে শোনা যায়নি, কিন্তু ভারসাম্য ধ্বনিত হয়েছিল।
আড়াই হাজার বছর আগে বুদ্ধদেবের বাণী ও আদর্শে এই ভাবাদর্শ এদেশের চিন্তারাজ্যে এমন
বিপ্লব এনেছিল যার ফলে রাজা নেবে আসতেন পথের ধুলোয়, রাণী হতেন ভিক্ষুণী।
চিতোর-রাণী মীরাবাঈ
ছিলেন এমনি এক আদর্শে অনুপ্রাণিতা। ভক্তি-ভাব বিলাস-আকর্ষণকে জয় করলো। একদিন
প্রাসাদ ছেড়ে রাণীমা পথে বেরিয়ে পড়লেন নগর-কীর্তনে।
রাজ্য মধ্যে হৈ চৈ পড়ে
গেল, রাজপথের উপর দিয়ে রাণী মা গেয়ে চলেছেন। অপূর্ব সে কন্ঠ, ভাবের আবেশে দু’চোখ
দিয়ে জল ঝরছে, বস্ত্রপ্রান্ত ধুলিধুসর হয়ে গেছে, মুখে এক স্বর্গীয় শ্রী। সবাইকেই
সেই সুর ডাক দিয়ে যায়, ছেলে বুড়ো সবাই ছুটে আসে রাণীমার পশ্চাতে।
ভাবের আতিশয্যে রাণী-মা
মূর্চ্ছিতা হয়ে পড়লেন পথের উপর প্রজারা চঞ্চল হয়ে উঠলো তাঁর সেবায়।
মহারাজ ক্রুদ্ধ হয়ে
উঠলেন—এতো ভক্তি ভালো নয়। রাণী রাজপথে গিয়ে নামবে সাধারণ প্রজাদের মাঝে।
এ অপরাধের ক্ষমা নেই,
মহারাজ আদেশ দিলেন—নদীজলে দেহত্যাগ করাই রাণীর পক্ষ্যে বিধেয়...
রাজ আদেশ শিরোধার্য করে
রাণী-মা নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
কিন্তু তাঁর মৃত্যু হোল
না, নদীর স্রোত তাঁকে তটে এনে পৌঁছে দিল অচেতন অবস্থায়।
তারপর হরিনাম গাইতে
গাইতে মীরা চললেন, বৃন্দাবনে, সারাপথে ভক্তি-স্রোতের ঢেউ উঠলো। এক বিরাট জনসঙ্ঘ
তাঁর সঙ্গে এসে উঠলো বৃন্দাবনে। মীরা-সম্প্রদায় গড়ে উঠলো। এখনও তাঁরা রাধা-কৃষ্ণের
সঙ্গে মীরাদেবীর অর্চনা করে থাকেন।
Malli potter girl.
Ramayana in his writing.
Schoolgirl is the text of the Ramayana?
Brahmin scholars, so I said, 'What is that, a potter's daughter's school to read the Ramayana.
Another group said: Why not? Properties will judge, will judge the nation? What was the best book to read?
RT RT or not some of the blame, but something has to be reformed.
But in the end to win the quality status of the reforms. King krsnadeba he was Ramayana, said as many books recently saw the khanii best.
I do not have anything to say.
Baikhani as text is selected.
The day the world to work in for a short vacation sukobara hair after bath, sitting on the sidelines of the malli wrote page after page of the carpet ahead of the scribbles. Tends to be the end of the manuscript.
And when the news came-malli, now you all schools Ramayana text.
Satyi? Malli logically can not believe that, for the recreation of his leisure time to sit down and he wrote it, he will memorize the guys at school, and they will be echoed to the tune of households, in the streets ...
Poets do not ask for any more than that day. This is the biggest feast, the great glory.
This will be helpful in a potter's daughter-so easily is inconceivable. But it really came to life mallira.
Higher education and the education of girls in the big risk, hundreds of years before the soil of Hindustan has been made possible in the history of any country in the world and also make it easier to match.
Malli
Malli potter girl.
Ramayana in his writing.
Schoolgirl is the text of the Ramayana?
Brahmin scholars, so I said, 'What is that, a potter's daughter's school to read the Ramayana.
Another group said: Why not? Properties will judge, will judge the nation? What was the best book to read?
RT RT or not some of the blame, but something has to be reformed.
But in the end to win the quality status of the reforms. King krsnadeba he was Ramayana, said as many books recently saw the khanii best.
I do not have anything to say.
Baikhani as text is selected.
The day the world to work in for a short vacation sukobara hair after bath, sitting on the sidelines of the malli wrote page after page of the carpet ahead of the scribbles. Tends to be the end of the manuscript.
And when the news came-malli, now you all schools Ramayana text.
Satyi? Malli logically can not believe that, for the recreation of his leisure time to sit down and he wrote it, he will memorize the guys at school, and they will be echoed to the tune of households, in the streets ...
Poets do not ask for any more than that day. This is the biggest feast, the great glory.
This will be helpful in a potter's daughter-so easily is inconceivable. But it really came to life mallira.
Higher education and the education of girls in the big risk, hundreds of years before the soil of Hindustan has been made possible in the history of any country in the world and also make it easier to match.
মল্লী
কুমোরের মেয়ে মল্লী।
তার লেখা রামায়ণ।
সেই রামায়ণ হবে ইস্কুলের
পাঠ্য?
ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা
বললেন—তাই তো, এ কেমন করে হয়, কুমোরের মেয়ের রামায়ণ ইস্কুলে পড়া হবে।
আরেক দল বললেন—কেন হবে
না? গুণের বিচার করবো, না জাতির বিচার করবো? ভাল বই হলে পাঠ্য হতে দোষ কি?
কিন্তু দোষ কিছু থাক্
বা না-থাক্, সংস্কার বলে তো একটা কথা আছে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত
সংস্কারকে জয় করে গুণের মর্যাদা। রাজা কৃষ্ণদেব সে রামায়ণ পড়েছিলেন, বললেন—যতগুলি
বই সম্প্রতি দেখেছি, ওই খানিই সবার সেরা।
আর বলার কিছু থাকে না।
বইখানি পাঠ্যরূপে
নির্বাচিত হয়।
সারাদিন সংসারের কাজ
করতে হয়, স্নানের পর চুল শুকোবার জন্য থাকে খানিক অবসর, সেই অবসরে মল্লী বসে বসে
লেখেন, তালপাতার উপর কলমের আঁচড় এগিয়ে চলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। পুঁথি শেষ হতে থাকে।
এমন সময় খবর এলো—মল্লী,
তোমার রামায়ণ এখনকার সকল বিদ্যালয়ে পাঠ্য হবে।
--সত্যি? মল্লী কথাটি
যেন বিশ্বাস করতে পারে না, নিজের চিত্তবিনোদনের জন্য অবসর কালে বসে বসে সে যা
লিখেছিল, তা একদিন দেশের ছেলেরা ইস্কুলে বসে মুখস্থ করবে আর তাদের সেই সুর
প্রতিধ্বনিত হবে গৃহে গৃহে, পথে ঘাটে...
কোন কবি এর চেয়েও বড়
কিছু কামনা করে না কোন দিনই। এই তার সবচেয়ে বড় তৃপ্তি, সব চেয়ে বড় গৌরব।
সামান্য কুমোরের মেয়ের জীবনে এতো বড় সৌভাগ্য
আসবে—এতো সহজে ভাবাই যায় না। কিন্তু মল্লীর জীবনে সত্যই তা এলো।
মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা এবং
সেই শিক্ষার এতো বড় সম্ভবনা, শত শত বছর আগে এই হিন্দুস্থানের মাটিতেই সম্ভব হয়েছে,
পৃথিবীর আর কোন দেশের ইতিহাসে এমন উদাহরণ সহজে মেলে না।
নাচী
--অমন মহাপণ্ডিতের মেয়ে
অথচ এতো নিরেট।
এই কথাটি নাচীকে প্রায়ই
শুনেত হয়। অল্প বয়সে সে বিধোবা, পিতার তাই একান্ত ইচ্ছা তাকে বিশেষভাবে সুশিক্ষিতা
করে তুলতে কিন্তু মেয়েটির মাথা বড় মোটা।
এলেশ্বর উপাধ্যায় ছিলেন
সর্বশাস্ত্রে সুপণ্ডিত, তিনি একদিন কথায় কথায় বললেন—জ্যাতিষ্পতি লতার রস খেলে মেধা
তীক্ষ্ণ হয়।
টোলের এক কোণে অবজ্ঞাত
ছাত্রী হিসাবে নাচী বসেছিল, কথাটা তারও কানে গেল।
পরদিনই নাচী প্রচুর
পরিমাণে জ্যোতিষ্পতি লতার রস পান করলো। তা বিষতুল্য হয়ে দাঁড়ালো—সুরু হল গাত্র
দাহ।
শেষে অসহনীয় জ্বালা
শান্ত করার উদ্দেশ্যে নাচী এক কূপের মধ্যে লাফিয়ে পড়লো। কূপে জল ছিল কম। আট দশ
ঘন্টা সেখানেই সে পড়ে রইল প্রায় অচেতন অবস্থায়।
এদিকে বাড়ীর মধ্যে সাড়া
পড়ে গেছে—মেয়েটা গেল কোথায়? পিতা এদিক-সেদিক নাচী-নাচী বলে হাঁক ডাক সুরু করলেন।
জলে থাকার জন্য ধীরে
ধীরে বিষ ক্ষয় হতে লাগলো, চেতনা ফিরে আসতেই পিতার ডাক কানে এলো, নাচী তাড়াতাড়ি
সাড়া দিল—এই যে আমি।
সেই দিন থেকে নাচী
অপূর্ব মেধাবিনী হয়ে উঠলো। পিতার সব ছাত্রকে পিছনে ফেলে সে এগিয়ে এলো সবার আগে।
শাস্ত্র শেষ করে নাচী
কাব্য ও সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করলেন। নিজের জীবন নিয়ে একখানি নাটক লিখলেন—‘নাচী-নাটক’।
তারপর সুরু হোল তীর্থ
যাত্রা, দাক্ষিণাত্যের অনেক জায়গা ভ্রমণ করে অনেক বড় বড় পণ্ডিতকে তর্কে হারিয়ে
নাচী দিগ্বিজয় করলেন। পণ্ডিত এলেশ্বর উপাধ্যায়ের কন্যা হিসাবে আর দ্বিমত রইল না।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের
মেয়েরা যখন বেশভূষার সৌখীনতা নিয়ে ব্যস্ত এই হিন্দুস্থানে তখন মেয়েরা দীশক্তি
বৃদ্ধির চেষ্টায় বিষপান করতেও পশ্চাৎপদ হয়নি—এইখানেই ভারত নারীর বৈশিষ্ট, এই
বিশেষত্ব নিয়েই হিন্দুস্থানের সংস্কৃতি আজও বেঁচে আছে।
খনা
রাজ-জ্যোতিষী ক’দিন আর
রাজসভায় যান না। সারা রাত জেগে নক্ষত্র-খচিত আকাশের পানে তাকিয়ে খড়ি পাতেন। আঁকের
পর আঁক এগিয়ে চলে। তারপর হতাশভাবে মাথা নেড়ে উঠে পড়েন, ঘরের মধ্যে পদচারণা করতে
করতে বিড় বিড় করে বলে উঠেন –হোল না, হোল না। এ আমি পারবো না, আমার বিদ্যের বাইরে।
একটির পর একটি রাত্রি এই
ভাবে কেটে যায়। পুত্রবধু লক্ষ্য করেন শ্বশুরের চাঞ্চল্য। শেষে একদিন জিজ্ঞাসা করে
বসেন—কি হোল বাবা, আমাকে বলুন।
--বড় জটিল প্রশ্ন মা, বড়
কঠিন...
--বলুন, আমার জানতে
ইচ্ছা করে। সে এমন কি প্রশ্ন যা আপনার মত আচার্যকে চিন্তিত করছে?
--মহারাজ বলেছেন, আকাশে
কতগুলি তারা আছে গুণে বলতে হবে।
--ওঃ এই। আচ্ছা আমি বলে
দেব।
পুত্রবধু
জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশেষ জ্ঞানী, জ্যোতিষের সব কিছুই বাল্যে ও কৈশোরে পড়ে নেয়েছেন,
অল্পক্ষণের মধ্যেই খড়ি পেতে উত্তর বের করে দিলেন।
বরাহ আচার্য
বিক্রমাদিত্যের রাজসভায় গিয়ে বললেন—আপনার প্রশ্নের উত্তর আমি জেনেছি মহারাজ।
মহারাজ শুনলেন, তারপর
জিজ্ঞাসা করলেন—আপনার সমাধান যে সঠিক হয়েছে সে বিচার করার মত জ্ঞান আমাদের নেই,
সেইজন্যই জিজ্ঞাসা করছি কিসের উপর ভিত্তি করে আপনি এই গণনা করলেন?
আচার্য বললেন—এই গণনা
আমারও জ্ঞানের বাইরে। আমি তিনরাত্রি ধরেও এর সমাধান করতে পারিনি, আমার পুত্রবধু
শ্রীমতী খনা এর মীমাংসা করেছে।
মহারাজ খনার বিদ্যার
পরিচয় শুনলেন, বললেন—এমন এক রত্নকে আপনি ঘরের মধ্যে বন্ধ করে রেখেছেন? বরাহ
আচার্য, কাল থেকে শ্রীমতী খনার স্থান হবে এই রাজসভায়। তিনি হবেন এখানকার দশম রত্ন।
কূলবধু এসে বসবে সভার
মাঝে? বরাহ ছেলেকে বললেন—খনার জিহ্বা কেটে ফেল, বাক্শক্তি না থাকলে রাজসভায় যাবার
আর কোন প্রয়োজন থাকবে না।
খনা তৈরী হয়েই বসেছিল।
মিহির কিছু বলার আগেই খনা বললেন—আমি সব জানি, গুণে দেখেছি, এই আমার অদৃষ্ট।
মিহির জিহ্বা কেটে
ফেললো, যাতনায় খনা চেতনা হারালেন। রক্তস্রোত বন্ধ হোল না, খনাও আর জাগলো না।
ভারতের এক শ্রেষ্ঠা
বিদূষী সংস্কারের কাছে আত্মবলি দিলেন। তারপর কত যুগ চলে গেল, কিন্তু আজও জ্ঞান
দিয়ে আমরা সংস্কারকে জয় করতে পারলাম না।
সংযুক্তা
পুরোনো দিল্লীর ধ্বংস
শেষের মাঝে আজও দেখা যায় পৃথ্বিরাজের কেল্লা, প্রাসাদের জীর্ণ থামগুলি পড়ি পড়ি করে
আজও পড়েনি।
ওর সঙ্গে জরিয়ে আছে
হিন্দুস্থানের এক শাশ্বত কাহিনী।
দৃশদ্বতীর তীরে
শত্রুসমাবেশ হয়েছে, দিল্লীর পৃথ্বিরাজ ও রাজস্থানের সমরসিংহ তাদের গতিরোধ করে
দাঁড়ালেন নারায়ণপুর গ্রামে, তিরৌরীর ক্ষেত্রে। প্রথম বারের যুদ্ধে সাহাবুদ্দিন
শৃগালের মত পলায়ন করেছিল, এবার সে ছলের আশ্রয় নিল, জানালো—লড়াই আমি করবো না, শুধু
আমার উপরওয়ালার আদেশ পেলেই ফিরে যাই।
সত্যভাষী হিন্দুরা সেই
কথায় বিশ্বাস করলো, আর তারই ফলে অতর্কিতে নদী পার হয়ে শত্রুরা তাদের আঘাত করলো,
পৃথ্বিরাজ ও সমরসিংহ প্রাণ দিয়েও সে আঘাতকে প্রতিরোধ করতে পারলেন না। হিন্দু
স্বাধীনতার সূর্য দৃশদ্বতীর তীরে অস্ত গেল শত শত বছরের জন্য।
ভগ্নদূত দিল্লীর
প্রাসাদে খবর পৌঁছে দিল—শত্রু আসছে।
রাণী সংযুক্তা অধীর হলেন
না, শত্রুর কাছে নতজানু হওয়ার চেয়ে মৃত্যুও ভালো। এতদিন স্বামীর মঙ্গল কামনায় তিনি
উপবাস করেছিলেন, এবার স্বামীর অনুগমন করার জন্য প্রস্তুত হলেন।
চিতা সাজানো হলো।
রক্তবস্ত্র পরে রাণী
অগ্নি প্রদক্ষিণ করে চিতার মধ্যে প্রবেশ করলেন। প্রাসাদের আরও বহু রমণী সংযুক্তার
পদানুসরণ করলেন।
দিল্লীর রাজপ্রাসাদ
শ্মশান হয়ে গেল।
সাহাবুদ্দিনের বাহিনীকে
আরেক প্রতরোধের সম্মুখীন হতে হোল দিল্লী-দূর্গের সামনে।
শত শত হিন্দু সৈনিকের
মৃতদেহগুলির উপর দিয়ে সাহাবুদ্দিন যখন দুর্গ মধ্যে প্রবেশ করলো সেখানে তখন শূন্য
গৃহগুলির মাঝে বাতাসের হাহাকার জেগেছে, শ্মশানের নীরবতা ব্যথাতুর করে রেখেছে
চারিপাশ। এইটিই বোধ হয় ভারতভূমির ইতিহাসে প্রথম জরহব্রত।
সংযুক্তা আজ আর নেই
সত্য, কিন্তু তাঁর চিতাভস্ম কণা কণা করে জড়িয়ে রেখে গেছেন ভারত মহিলার অন্তরের
আকাশে।
কর্মদেবী (সমরসিংহের
রাণী)
দিল্লী ও কান্যকুব্জ
পাঠানেরা জয় করলো, তারপর তোতবুদ্দীনের বিজয় বাহিনী এগিয়ে এলো রাজপুতনার দিকে।
সমরসিংহ পৃথ্বিরাজের
সঙ্গেই নিহত হয়েছেন। রাজকুমার কর্ণ নেহাৎ ছেলেমানুষ। প্রধানেরা সকলেই দৃশদ্বতীর
তীরে মহাকালের কোচে ঢলে পড়েছেন, এখন এই পাঠানদের সম্মুখীন হবার মত উপযুক্ত অধিনায়ক
রাজস্থানে আর কেউ নেই। তবে কি বিজাতীয় শত্রুর চরণে আজ রাজস্থান মাথা নোয়াবে। কিশোর
রাজকুমার নিহত হবে শত্রুর হাতে?
রাণী কর্মদেবী প্রস্তুত
হলেন, তলোয়ার হাতে তিনি অগ্রসর হলেন শত্রুর সম্মুখীন হতে।
হাজার হাজার রাজপুত সেনা
কর্মদেবীর অনুগমন করলো।
আন্বেরের কাছে দু’দল
পরস্পরের সম্মুখীন হোল।
কোতবুদ্দীন বহু যুদ্ধ
করেছেন, কিন্তু কোনদিন কোন মহিলা সেনানায়িকার সম্মুখীন যে হতে হবে তা তিনি কল্পনাও
করেন নি। কি করবেন তাই ভেবে পেলেন না, কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে বিস্ময়ের স্থান নেই।
শত্রুর সম্মুখীন হয়ে পিছিয়ে যাবারও পথ নেই।
লড়াই শুরু হয়ে গেল।
কর্মদেবী জীবন পণ করে
যুদ্ধে নামলেন—হয় জয়, না হয় মৃত্যু।
যেখানে লড়াই কঠিন রূপ
নিচ্ছে সেইখানে কালো ঘোড়ার পিঠে কর্মদেবীর ধারালো তলোয়ারের ঝিক্মিক্ করে উঠছে।
শত্রুর ব্যূহ যেখানে দুর্ভেদ্য বলে মনে হয় সেখানেই কালো ঘোড়া তীরের মত ছুটে এসে আঘাত
হানে প্রচণ্ড। পাঠান সেনা চঞ্চল হয়ে উঠে, বিব্রত হয়ে উঠে।
যে দেশে মেয়েরাও যুদ্ধ
করে সে দেশে লড়াই জেতা সহজ কথা নয়। পাঠানেরা পিছু হটতে সুরু করলো।
কিন্তু ভারত-বিজয়ের
স্বপ্ন এতো শীঘ্র ধুলিসাৎ হয়ে যাবে। একবার শেষ চেষ্টা করার জন্য কোতবুদ্দীন নিজে
এগিয়ে এলেন।
পরক্ষণেই কর্মদেবীর
তরবারী তাঁকে আঘাত করলো। আহত কোতবুদ্দীন পালিয়ে গেলেন, আর তাঁরই সঙ্গে পালিয়ে গেল
তাঁর বিজয় বাহিনী। রাজপুতদের জয়োল্লাসে রণভুমি মুখরিত হয়ে উঠলো।
কোতবুদ্দীনের সমগ্র ভারত
জয়ের আশা রাজস্থানের এক রাণীর অসির আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
কর্মদেবী (মহিল
রাজকুমারী)
নববধূকে নিয়ে বর আসছিল
স্বদেশে।
স্বদেশে বলার চেয়ে
স্বরাজ্যে বলাই ভালো, বর হচ্ছেন যশল্মীরের পুগলরাজকুমার আর কনে হচ্ছেন অরিন্ত
নগরের মহিল রাজকুমারী।
পথে মরুভূমির প্রান্তে
রাঠোর রাজকুমার তাদের আক্রমন করলেন। আক্রমন করার কারণও ছিল, রাঠোর-রাজকুমার ছিলেন
মহিল রাজকুমারীর প্রাণিপ্রার্থী, কিন্তু তাঁকে যখন উপেক্ষা করে মহিল রাজ মেয়ের
বিয়ে দিলেন পুগল-রাজকুমারের সাথে তখন অরণ্যকমল অপমান বোধ করলেন এবং
পুগল-রাজকুমারকে আক্রমণ করলেন মধ্যপথে।
লড়াই সুরু হোল।
নববধূ কর্মদেবী দেখতে
লাগলেন।
দু’পক্ষের প্রায় হাজার
খানেক সেনা নিহত হোল।
এভাবে নিজেদের মধ্যে
লোকক্ষয় করা বাঞ্ছনীয় নয়, রাজকুমার দু’জন পরস্পরকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান করলেন।
একদিকে রাঠোর কুমার
অরণ্যকমল।
আরেকদিকে পুগল কুমার
সাধু।
রাজকন্যা বললেন—পুগলকুমার,
তুমি বিশে, রণনিপুণ বলেই জানি, আমি চাই তুমি তোমার বীহত্বে শত্রুপক্ষকে জয় কর, আর
যদি তুমি বিজিত হও ও মৃত্যু বরণ কর আমিও তোমার অনুগামিনী হব।
আসিতে অসিতে ঝন্ঝনা
বেজে উঠলো।
দু’জনের কেউই কম নন্।
অরণ্যকমলের কাঁধে সাধু
আঘাত করলেন, পরমুহূর্তেই সাধুর মাথার উপরে এসে পড়লো অরণ্যকমলের তলোয়ার।
অরণ্যকমল মরণাত্মিক আহত
হলেন, সাধুও আর উঠলেন না।
নববধূ স্বামীর বীরত্ব
দেখলেন, রাজপুতের মেয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে স্বামীর চিতায় সহমরণের জন্য প্রস্তুত হলেন।
চিতায় ওঠার আগে এক হাতে
তলোয়ার ধরে নিজের একখানি হাত কেটে ফেললেন। বিশ্বস্ত এক সৈনিকের হাতে সেই হাতখানি
দিয়ে বললেন—আমার শ্বশুর মহাশয় তো আমাকে দেখেন নি, এই হাতখানি তাঁকে দিও, তিনি
বুঝতে পারবেন আমি কেমন ছিলাম।
অপর হাতখানি তিনি কেটে
ফেলার আদেশ দিলেন, সেটি আরেক সৈনিকের হাতে দিয়ে বললেন—এটি আমাদের মহিল কবিকে উপহার
দিও, তাঁকে চারণগাথার প্রেরণা দেবে—
তারপর চিতাগ্নিতে সব শেষ
হয়ে গেল। অগ্নির লেলিহান শিখা মহাকালের অট্টহাসির মত দিগন্তে লীন হয়ে গেল, কিন্তু
প্রতিধ্বনি রেখে গেল ইতিহাসের পাতায়।
এই ধরণের নারীচরিত্র
পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও আছে কি?
কর্মদেবী (চিতোরের রাণী)
১৫৬৮ সাল।
সম্রাট আকবরের মুঘল
বাহিনী চিতোর আক্রমণ করেছে, রাণা জয়মল্ল নিহত হয়েছেন, রাজপুতবাহিনীর নেতৃত্ব
নিয়েছেন ষোল বছরের ছেলে পুত্ত।
ষোল বছরের ছেলের সামনে
মুঘল সেনা ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে, তাদের জয়ী করতে হলে পুত্তকে কৌশলে আঘাত করতে
হবে।
সম্রাট আকবর অর্দ্ধেক
সেনা নিয়ে পিছন দিক থেকে পুত্তকে আক্রমণ করার জন্য অগ্রসর হলেন।
রাণী কর্মদেবী আর চুপ
করে থাকতে পারলেন না, বর্ম এঁটে ঘোড়ার পিঠে বেরিয়ে পড়লেন, সঙ্গে চললেন মেয়ে
কর্ণবতী আর পুত্রবধু কমলাবতী।
সঙ্কীর্ণ গিরিসঙ্কট দিয়ে
আকবরের বাহিনী অগ্রসর হচ্ছিল সহসা তাদের গতিরোধ হোল, গুলিতে গুলিতে মুঘল সেনা
ত্রস্ত হয়ে উঠলো।
তিনটি মহিলা বিরাট মুঘল
বাহিনীর গতিরোধ করলেন।
আকবর বিস্মিত হলেন।
ঘোষণা করলেন—এই তিনটি মহিলাকে জীবিত অবস্থায় ধরতে হবে, যে ধরবে তাকে দেওয়া হবে
প্রচুর পুরস্কার।
কিন্তু ধরবে কে, তাদের
কাছে অগ্রসর হয় সাহস কার।
ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে
লড়াই চললো—উন্মত্ত, ক্ষিপ্ত, মৃত্যুপাগল মুঘল সেনার সামনে তিনজন রাজপুত মহিলা।
কর্ণবতী লুটিয়ে পড়লেন
মাটিতে।
কমলা দেবী গুলি খেয়ে
ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গেলেন।
কর্মদেবী অচঞ্চল।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, এমন
সময় একদিকের যুদ্ধ জয় করে পুত্ত ফিরলেন। রক্তাপ্লুত ছেলের পানে তাকিয়ে মা
বললেন,--শোকের অবসর নেই, যারা গেল তারা যাক, আমিও চললাম। মাতৃভূমির শত্রুকে আগে
শেষ কর।
কর্মদেবী আহত হয়েছিলেন
এবার তিনি ঘোড়া থেকে পড়ে গেলেন। ছেলেকে শেষ আদেশ জানাবার জন্যই বুঝি তিনি এতক্ষণ
বেঁচে ছিলেন।
পুত্ত একবার তাকালেন
মায়ের পানে, বোনের পানে, স্ত্রীর পানে। রাজপুতের ছেলে তিনি, সারাদিনের শ্রান্তি মন
থেকে দূর হয়ে গেল।
কর্মদেবী বললেন—রাজপুতের
ছেলে তুমি, মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত না করে ফিরবে না, স্বাধীনতা হারানোর চেয়ে
মৃত্যুও শ্রেয়।
মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে পুত্ত
আবার শত্রুর মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
--সেই তাঁর শেষ
যুদ্ধ।...
মা মেয়ে বউ ছেলে সবাই
একই সঙ্গে চিতায় উঠলো।
এমনই ছিল রাজপুত নারীর
শিক্ষা, মায়ের এই শিক্ষাই রাজপুত জাতিকে ভারতের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
কৃষ্ণকুমারী
মেবার রাণা ভীমসিংহের
মেয়ে কৃষ্ণকুমারীকে লোকে বলে ‘রাজস্থানের কুসুম’। সেই মেয়ের বিয়ে দেবার জন্য
উপযুক্ত পাত্র চাই। এমন সময় দু’জন পাণিপ্রার্থী আবেদন জানালো ঃ
জয়পুরের রাজা জগৎসিংহ।
মাড়বারের রাজা মানসিংহ।
মাড়বার রাজের বন্ধু
সিন্ধিয়া জানালেন—যদি মাড়বার রাজের সঙ্গে কৃষ্ণকুমারীর বিবাহ না দেওয়া হয় তাহলে
যুদ্ধ অনিবার্য।
জয়পুরের জগৎসিংহও পিছ্পা
নন, জানালেন, --প্রয়োজন হলে তিনি যুদ্ধ করবেন।
জয়পুর ও মাড়বারের যুদ্ধ
সুরু হয়ে গেল। শত শত সৈনিকের রক্তে মেবারের মাটি লাল হয়ে উঠলো।
রাজমন্ত্রী পরামর্শ
দিলেন—একটি মেয়েকে উপলক্ষ করে কেন এতো রক্তপাত, রাজস্থানের কল্যাণের জন্য এর
মূলোচ্ছেদ করাই বিধেয়।
ভীমসিংহ দৌলতসিংহের উপর
ভার দিলেন, দৌলত বললেন—আমি পারবো না।
তখন যৌবনদাস।
তলোয়ার হাতে যৌবনদাস
রাজকন্যার ঘরে গিয়ে ঢুকলেন, বিছানায় ঘুমুচ্ছে ফুলের মত ভাইঝি, খুন করতে হাত উঠলো
না, ফিরে এসে বললেন—আমি পারবো না।
এদিকে রাজ্যে শান্তি
রক্ষা করা এক সমস্যা।
শেষে মেয়ের কানে কথা
উঠলো, মা তো কেঁদেই আকুল, মেয়ে বললো—দুঃখ কি জন্য মা? জীবন তো চিরস্থায়ী নয়।
রাজপুতের মেয়ে আমি। আমি মৃত্যুকে ভয় করবো? রাজ্যের কল্যাণের জন্য আত্মত্যাগ করতেই
তো আমি জন্মেছি—
পিতা বিষপূর্ণ পাত্র
আনলেন, অচঞ্চল চিত্তে মেয়ে তা পান করলেন, হাত কাঁপলো না, মুখের হাসি ম্লান হোন না
এতটুকু।
এক পাত্র নয়। পরপর
তিনপ্রত্র হলাহল পান করে কৃষ্ণকুমারী লুটিয়ে পড়লেন শয্যার উপর। সারা দেহ নীলাভ হয়ে
গেল, কিন্তু মুখের হাসি তখনও অম্লান।
সমগ্র মেবারে সে খবর
ছড়িয়ে পড়লো বিদ্যুৎগতিতে, জয়পুর ও মাড়বার বাহিনী মাথা নত করে ফিরে গেল নিজ নিজ
দেশে।
প্রজাপুঞ্জের কল্যাণের
জন্য ষোল বছরের কিশোরী মেয়ের এমনভাবে আত্মত্যাগ আর কোন দেশের ইতিহাসে কেউ পড়েছে
কি?
দুর্গাবতী (শিহলাদী
রাণী)
রাইসিন দুর্গের কথা।
হুমায়ুনের বাদশাহী আমলে
বাহাদুর শা দুর্গ আক্রমন করলো।
দুর্গের ভার ছিল
লক্ষ্মনের উপর।
অজেয় দুর্গ। জয় করা সহজ
নয়। যুদ্ধ করে বিশেষ সুবিধা হবে না দেখে বাহাদুর শা দূত পাঠালেন—দুর্গাধিপ মহারাজ
শিহলাদি ইতিপূর্বেই বন্দী হয়েছেন, লক্ষ্মণ যদি এখন মুঘলদের হাতে দুর্গ ছেড়ে দেন,
তাহলে শিহলাদিকে ছেড়ে দেওয়া হবে, এবং উপযুক্ত সম্মান রক্ষা করা যাবে।
মহারাজ শিহলাদি ছিলেন
লক্ষণের বড় ভাই, বাহাদুর শাহের কথায় বিশ্বাস করে ভাইয়ের মুক্তি কামনায় লক্ষ্মণ
দুর্গ ছেড়ে দিলেন।
মুঘল সৈন্য দুর্গমধ্যে
প্রবেশ করলো, কিন্তু প্রতিশ্রুতির মূল্য তারা রাখলো না, সম্মানের বদলে
দুর্গবাসীদের উপর তারা ঘনিয়ে তুললো সংহারের করালরূপ।
লক্ষণ এতদূর আশা করেন
নি।
শিহলাদি-পত্নী রাগে
দুঃখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন, বললেন—ছি ছি, এ কি করলে? সামান্য ভাইয়ের প্রাণ রক্ষা
করার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনলে। এর চেয়ে মৃত্যুও তো বরণীয় ছিল।
হিন্দু-মেয়ের কাছে
আত্মসম্মান বড় কথা। মুঘল-সেনার কাছ থেকে মর্যাদা রক্ষা করার জন্য রাণী দুর্গাবতী
নিজের প্রাসাদে আগুন দিলেন। ঘরে ঘরে মেয়েরা আগুন জ্বেলে পুড়ে মরলো।
পুরুষের দল তলোয়ার হাতে
অগ্রসর হোল শত্রুর সংহার করতে। দেখতে দেখতে সব শেষ হয়ে গেল।
মুঘল সেনারা যখন দুর্গের
শীর্ষে জয়পতাকা উড়ালো, তখন দুর্গের পথে পথে মৃতদেহের স্তুপ, বহ্নিমান গৃহগুলির
লেলিহান শিখা উঠছে আকাশের গায়। রাইসিন দূর্গ জল হোল বটে, কিন্তু জীবিত একটি
মানুষকেও জয় করা গেল না।
সেদিনকার হিন্দুমেয়েরা
দুর্গাবতীর মত স্বামী ও রাজ-ঐশ্বর্যের চেয়ে স্বাধীনতা বড় বলে মনে করতেন।
মাধবী
পুরীর জগন্নাথদেবের
মন্দিরের প্রতিদিনকার বিবরণ লেখার জন্য একজন করে লেখক নিজুক্ত থাকতো—এ অনেক দিনের
প্রথা।
লেখকেরা নিয়মিত অর্থ
পেতেন আর অর্থের চেয়েও বড় ছিল সম্মান।
রাজা প্রতাপরুদ্র তখন
পুরীর রাজা। পুরোনো লেখকের মৃত্যু ঘটায় এক নতুন লেখককে নিযুক্ত করার কথা উঠলো। কে
যে যোগ্য পাত্র তারই নির্বাচন সুরু হোল।
তখনকার দিনে যোগ্যতাই
ছিল বিচার্য, এখনকার মত সুপারিশই তখনকার দিনে সব চেয়ে বড় যোগ্যতা বলে গণ্য হোত না।
রাজা প্রতাপরুদ্র প্রত্যেকটি
লেখকের নাম নিয়ে আলোচনা করতে করতে শেষে ঠিক করলেন মাধবী দেবীই সর্বশ্রেষ্ঠা। সুধু
লেখার দিক থেকেই তিনি সেরা নন, তিনি পরম ভক্তিমতী বৈষ্ণবী এবং চৈতন্য মহাপ্রভুর
সাক্ষাৎ শিষ্য। পুরীর মন্দির সেখানে মানুষে মানুষে জাতির কোন পার্থক্য নেই—বৈষ্ণব
আদর্শের কেন্দ্র, সেখানে মাধবী দেবীর দাবী সর্বাগ্রে।
মাধবী দেবী ছিলেন
স্বনামধন্য বৈষ্ণব শিখি-মাইতির বোন। শ্রীচৈতন্যদেব যখন নীলাচলে যান তখন মাধবী দেবী
তাঁর দর্শন পান। সন্ন্যাস গ্রহণের পর মহাপ্রভু নারীমুখ দেখতেন না, সেইজন্য মাধবী
দেবী কখনও তাঁর সামনে আসেন নি, অন্তরাল থেকে তাঁর বাণী শুনতেন। মহামানবের বাণী ও
ব্যক্তিত্ব তাঁকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। পরবর্তী জীবনে তিনি বহু কীর্তন রচনা করেন
এবং সেই কীর্তনগুলি বলরাম দাস, গোবিন্দদাস, বাসু ঘোষ প্রভৃতি তখনকার দিনের সবসেরা
কীর্তনীয়াদের চেয়ে কোন মতেই নিরেশ ছিল না।
মাধবী দেবীই পুরীর মন্দিরের
প্রথম মহিলা লিপিকার। হিন্দুস্থান চিরদিনই গুণের আদর করেছে—রাণী পুরুষের ভেদ
রাখেনি, আজকের যে ভেদাভেদ সংক্রামক হয়ে উঠেছে তা পাশ্চাত্য শিক্ষা ও বিদেশী
কর্ষাণার প্রভাব।
রায়বাঘিনী
আকবর তখন দিল্লীর
বাদশাহ।
এখনকার হাওড়া, হুগলী ও মেদিনীপুর
জেলার খানিক অংশ নিয়ে এক রাজ্য ছিল, তার নাম ছিল ভুরীশ্রেষ্ঠ।
ভুরীশ্রেষ্ঠের রাজা
ছিলেন রুদ্রনারায়ণ। রাজার মৃত্যুর পর বিধবা রাণী ভবশঙ্করীই জমিদারী দেখাশুনা
করতেন। পাঠানদের সঙ্গে তখন মুঘলদের বিরোধ চলছে। পাঠানেরা পরাজিত হলেও মুঘলদের
সম্রাট বলে মানতে রাজী নয়, তারা নতুন করে বিদ্রোহ করতে চায়। সবাইকে তারা দলে টানতে
ব্যস্ত। পাঠান সর্দার ওসমান একদিন ভবশঙ্করীর কাছে এসে বললো—আপনি এই যুদ্ধে আমাদের
সাহায্য করুন, ভবিষ্যতে আপনার অনেক সুবিধা হবে। ভবশঙ্করী রাজী হলেন না, বললেন—অকারণে
মুঘল বাদশাহের সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে আমি লোকক্ষয় করবো না, আপনাদের লড়াই আপনারা লড়ুন
গে—
ওসমান ফিরে এলো, মনে মনে
প্রতিজ্ঞা করলো ভবশঙ্করীকে একবার রীতিমত শিক্ষা দেবে, এমন অবস্থা করবে যে ওসমানের
সঙ্গে যোগ না দিয়ে রাণী রেহাই পাবেন না।
ভুরীশ্রেষ্ঠের রাজধানী
ছিল পাণ্ডুয়ার কাছে গড়-ভবানীপুর। সেখান থেকে সাতক্রোশ দূরে বাসডিঙা গড়ে কালীমন্দির।
অমাবস্যার দিন সন্ধ্যাবেলা রাণী ভবশঙ্করী কালীমন্দিরে গেলেন পূজা দিতে। ওসমান পথেই
লুকিয়ে ছিলেন, রাত্রিবেলা রাণী যখন ফিরছেন সৈন্যসামন্ত নিয়ে চড়াও হোল তাঁর উপর।
রাণী হতচকিত হয়ে পড়লেন,
নিজের রাজ্যের ভিতর রাজধানীর এতো কাছে কেউ যে তাঁকে আক্রমণ করতে পারে তা তিনি
ভাবতেও পারেন নি। কিন্তু তখন আর চিন্তা করবার সময় ছিল না, সামান্য যে ক’জন
দেহরক্ষী ছিল, তাদেরকে নিয়েই পাঠানদের মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
বাঙ্গালীর মেয়ে মাত্র
পঁচিশজন দেহরক্ষী নিয়ে তলোয়ার হাতে দু’শো পাঠানের মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়বেন ওসমান তা
স্বপ্নেও ভাবেনি, ভেবেছিল ভয় পেয়েই রাণী মাথা নত করবেন। কিন্তু চকিতে রাণীর ঘোড়া
তাদের মাঝে এসে পড়লো, রাণীর তলোয়ার পাঠানদের মশালের আলোয় ঝিক্মিক্ করে উঠলো।
পাঠান সেনারা এমন ঘটনা প্রত্যাশাই করে নি, আক্রমণ করতে এসে তারাই আহত হোল। রানীর
সামনে যারা পড়লো আহত হোল, আর সবাই পথ ছেড়ে দিল। ওসমান ভবশঙ্করীর কেশাগ্রও স্পর্শ
করতে পারলো না, রাণী ফিরে এলেন রাজধানীতে।
এবার রাণীর বাদশাহের
কাছে খবর পাঠালেন—পাঠানদের ষড়যন্ত্রের কথা। আকবর সব শুনে রাণীকে উপাধি দিলেন—রায়-বাঘিনী।
ভারতের একজন শ্রেষ্ঠ সম্রাট সেদিন বাঙলার মেয়েকে বাঘিনীর সমতুল্য বলে মনে করেছিলেন,
আজকের মেয়েরা কি সেই ধারাকে রক্ষা করতে পারবে না।
দয়াময়ী দেবী
পূর্ববঙ্গের মধুমতীর
তীরে একখানি গ্রাম, নাম শ্যামপুর। বেশ বর্দ্ধিষ্ণু গ্রাম। রায়েরা এই গ্রামের
মালিক।
রায়েদের সমৃদ্ধি
ডাকাতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, একদিন রাতের অন্ধকারে অতর্কিতে গ্রামের মাঝে তারা
সাড়া তোলে। তাদের হাঁক শুনে গাঁয়ের লোকের বুক কেঁপে ওঠে, সবাই ভগবানকে স্মরণ করে,
কি জানি আজ রাতে কার কপালে কি দুর্ভোগ আছে, কে থাকবে আর কে যাবে।
ডাকাতদল এসে রায়েদের
দরজায় হাঁক দেয়—হে রে রে রে রে রে।
দেখতে দেখতে তারা দরজা
ভেঙে ফেলে, ‘জয় মা কালী’ বলে বাড়ীর ভিতরে ঢুকে পড়ে। দেয়ালে-গিরির ম্লান আলো তাদের
কালো চেহারায় যেন পিছলে পড়ে, কপালের উপর লাল সিঁদুরের ফোঁটাগুলো অনেকটা তফাৎ থেকেও
দেখতে পাওয়া যায়, ডাল সড়কি হাতে নিয়ে তারা লাফিয়ে ওঠে—হে রে রে রে রে।
বাড়ীর পুরুষ-মানুষ যারা
ছিল তারা রীতিমত প্রস্তুত হবার আগেই ডাকাতের দল হুড়মুড় করে অন্দর মহলে ঢুকলো।
মেয়েরা ভয়ে চীৎকার করে উঠলো,--এখনি ডাকাতেরা মারধর করবে, অপমান করবে, গায়ের গহনা
অবধি ছিনিয়ে নেবে।
বছরে বছরে কালীপূজা হোত
বাড়ীতে, বলির খাঁড়া ঝুলছিল ঠাকুর দালানের দেওয়ালে। বাড়ীর একটি বউ হঠাৎ এগিয়ে এলো,
খাঁড়াখানি নাবিয়ে নিয়ে অন্দর-মহলে দরজার মুখে এসে দাঁড়ালো। ডাকাদের দল এবার থমকে
দাঁড়ালো, কিন্তু মেয়েমানুষকে ভয় করার মত কিছু নেই। তারা এগিয়ে এলো।
কিন্তু বুঝতে তাদের ভুল
হয়েছিল। অগ্রগামী দস্যুটি কাছাকাছি হতেই খড়গের একঘায়ে সে ধরাশায়ী হোল, তারপরই
দ্বিতীয় জন।
তৃতীয় দস্যু আর অগ্রসর
হতে সাহস করলো না।
ইতিমধ্যে পিছনে গাঁয়ের
যুবকদের সাড়া পাওয়া গেল, দস্যুদলকে ডাকাতির আশা ছাড়তে হোল। তাড়াতাড়ি বাড়ী থেকে
বেরিয়ে তাদের পলায়নের পথ দেখতে হোল। বাড়ীর একটি সাধারণ বউয়ের কাছে একদল ডাকাত হটে
গেল।
এই বউটি কে জান? এঁর
ছেলে একদিন বাংলার ইতিহাসে দুর্দান্ত সাহসের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। ইনি
ছিলেন রাজা সীতারাম রায়ের মা দয়াময়ী দেবী।
0 Reviews