Read more
কিন্তু শুধু চোখের দেখা দেখিয়াই মনের ধাঁধা
ঘোচে কই? ছোটরানী রাজকন্যাকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন—‘কার ঝিয়ারী তুমি বাছা?’
কোথা তোমার ঘর?
কাদের কুলের বৌ গো তুমি?
কে বা তোমার বর?
রাজকন্যা উত্তর করিলেন—
‘কার ঝিয়ারী নাহি জানি,
সদাগর মোর স্বামী।
জন্ম হ’তে চিলনী মায়ের
কোলে মানুষ আমি’।
‘চিলনী-মায়ের কোলে মানুষ?’—ছোটরানী
বলিলেন-সেকী?
রাজকন্যা ছোটরানীকে তাঁর চিল্নী মায়ের কথা
বুঝাইয়া বলিলেন।
ছোটরানী জিজ্ঞাসা করিলেন—‘তোমার সে চিলনী-মা
কোথায় থাকে?’
রাজকন্যা শঙ্খচিলের পালকগুলি ছোটরানীকে
দেখাইয়া বলিলেন—‘চিলনী-মা মারা গিয়াছে। এই তার পালক। ইহার জন্যই দুধপুকুরে নাইতে
আসিয়াছি। পূর্ণিমার রাতে দুধপুকুকে এই পালক লইয়া নাইলে চিলনী-মা বাঁচিয়া উঠিবে’।
ইহার পর ছোটরানী চুপ করিয়া রহিলেন। ভাবিলেন—শঙ্খচিল
আগে বাঁচিয়া উঠুক। তারপর যে কথা আছে জিজ্ঞাসা করা যাইবে।
শঙ্খচিলের পালক লইয়া রাজকন্যা দুধপুকুরে জলে
নামিলেন। দুধপুকুরের জল পালকে লাগিতেই শঙ্খচিল বাঁচিয়া উঠিল। শঙ্খচিলকে বুকে
জড়াইয়া ধরিয়া রাজকন্যা পারে উঠিলেন। ছোটরানী তখন আদর করিয়া রাজকন্যাকে ডাকিয়া
রাজপুরীতে লইয়া গেলেন।
রাজকন্যাকে সঙ্গে করিয়া ঘরে গিয়া ছোটরানী
শঙ্খচিলকে জিজ্ঞাসা করিলেন—‘সত্যযুগের পাখী তুমি, শঙ্খচিল—সত্য করিয়া বল দেখি,
তোমার কোলে মানুষ এই যে-কন্যা, ইহাকে তুমি কোথায় পাইয়াছ?’
শঙ্খচিল বলিল—‘নদীতে পাইয়াছে। নতুন-সরা-ঢাকা
নতুন হাঁড়ির ভিতর ভাসিয়া যাইতেছিল, কান্না শুনিয়া ইহাকে আমার বাসায় লইয়া
গিয়াছিলাম।
ছোটরানী জিজ্ঞাসা করিলেন—‘সে কত পছর হইল?’
শঙ্খচিল রাজকন্যার বয়স গণিয়া বছরের হিসাব
দিল।
বছরের হিসাব পাইয়া ছোটরানীর আর ধৈর্য
ধরিতেছিল না। দাসীর দিকে ফিরিয়া তিনি হুকুম দিলেন ‘রাজবাড়ির ধাইকে এখনই ডাক’।
রাজবাড়ির ধাই বুড়ো-মানুষ। ছোটরানীর হুকুম
পাইয়া লাঠি ঠক্ঠক্ করিতে করিতে তখনই রাজবাড়িতে আসিয়া হাজির হইল।
1 Reviews
গল্প,গল্পেরলেখক ও পাবলিকেশন এর নামটা জানাবেন প্লিজ
ReplyDelete