তারপর সত্যি যখন তাঁর শ্রীমন্ত ফিরে এলো বিরাট রাজার পুরীতে

তারপর সত্যি যখন তাঁর শ্রীমন্ত ফিরে এলো বিরাট রাজার পুরীতে

Author:
Price:

Read more

তারপর সত্যি যখন তাঁর শ্রীমন্ত ফিরে এলো বিরাট রাজার পুরীতে তখন আবার তিনি আগেকার সেই মহারাণী। বিরাট রাজা এসে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে বলল ঃ ‘কে তুমি দেবী—ঠিক বলো—কোন্‌ দেবশিশু নিয়ে এসেছ আমার পুরীতে ছলনা করতে’।
মহারীণী তাঁর জীবনের সব কাহিনী খুলে বললেন।
বিরাট রাজা তাঁর পা ছাড়লেন না তবু। বললেন, ‘আমার মেয়ে তোমার দাসী হবে, দেবী-রাণী’।
‘সে কি?’ চমকে উঠে মা ইষ্টনাম জপ করলেন মনে-মনে তারপর বললেন, ‘এমনি ভাগ্য যদি হয় আমার খোকার সে রাজকন্যা কনে পাবে, সে ত আপনারই দয়া হবে’।
রাজা খুশী হয়ে পা ছাড়লেন।
কিন্তু রাজার খোশ-মেজাজে ত আর খোকার মর্জি পাল্টাবে না। সে যে পাতাল-কন্যাকে কথা দিয়েছে, বিয়ে করবে। এখন উপায়? পাতাল-কন্যাকেই জিজ্ঞেস করল খোকা-মহারাজ ঃ ‘প্রবাল-বিলাসিনীকে তুমি দাসী করে নিতে পারবে কি, ইলা?’
মেয়েটির নাম দিয়েছে কুমার ইলা।–ইলা মানে জল, আর পৃথিবী। আমাদের কুমারের মনে ছিল জলের কথা জড়িয়ে মেয়েটির সঙ্গে। তাই ওই নাম।
পাতালের ইলা কুমারের কথা শুনে ছলছল চোখে তাকিয়ে বললে ঃ ‘দাসী, আমি বরং দাসী হতে জানি—রাজকন্যা কেন দাসী হবেন’।
কে জট খুলবে। কুমার দৌড়লেন রাজকন্যার কাছে—বিয়ে নিয়ে এ কী হ্যাঙ্গামা উপস্থিত।
রাজকন্যা সব শুনে হীরামনের কাছে গেল। দাঁড়ে বসে হীরামন তখন দস্তুরমতো লাফালাফি শুরু করেছে—রাজকন্যাকে দেখেই সে চেঁচিয় উঠল ঃ—
সোঁদর বন
মোদের ধন—বাঘের ছা।
বোন দুজন
বন-ভোজন—কর গে যা।
এবার আর রাজকন্যের মুখ ভার নয়। হেসে কুটিপাটি টিয়ের ঠোঁটের বুলির সঙ্গে খিলখিলে হাসির পাল্লা।
কুমার হাঁ-করে তাকিয়ে আছে বুদ্ধুর মতো। বর হতে গেলে যেমনি হয়।
হাসতে হাসতে ফিরে এলো তার কনে।
কি হল? ব্যস্ত হয়ে বললে কুমার।
কি আর হবে রাজকন্যা হেসে আর বাঁচে না। আমরা দুবোনই তোমার কনে হব। বললে সে।
‘বা’—হনুমানের মতো সাতহাত লাফিয়ে উঠল কুমার হীরামন খুশী খুশী চোখে নেটন পায়রার মতো তখন ছড়া উড়োচ্ছে ঃ
সমুদ্দুর
বরুণপুর।।
বরবধূর
বদরপুর
‘বোরোবূদূর’।
বোরোবূদূর
ভোঁদর তোর
ভুরু বঁধুর
বড়ো মধুর।
স্বর যাদুর

‘সমুদ্দুর’।

0 Reviews