Read more
কারণ রুপাঞ্জেলের চুলগুলি ছিল খুব লম্বা, শক্ত যেন
সোনার-তার দিয়ে তৈরী। ডাইনির গলা শোনা মাত্রই রুপাঞ্জেল তার চুল খুলে নিচে নামিয়ে
দিল আর ডাইনি সেই চুল বেয়ে উপরে উঠত।
এরপর বেশ কয়েক বছর পেরিয়ে গেছে। একদিন দেশের রাজপুত্র
ঘোড়ায় চড়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এক মিনারের তলায় এসে পৌঁছাল।
সেখানে তার কানে ভেসে এল সুমধুর গান। এমন কন্ঠ রাজপুত্র
কখনও শোনেনি। সে মিনারের তলায় দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে শুনল –
‘আমি রুপাঞ্জেল একাকী কাটাই বনে
কেউ জানে না একাকী কাটাই সময় কেমন’।
গানে আকৃষ্ট হয়ে রাজপুত্র উপরে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করল।
কিন্তু কোন দরজা, সিঁড়ি কিছুই দেখতে পেল না। তাই সে ঘোড়ায় চড়ে প্রাসাদে ফিরে গেল।
সারা রাত তার ঘুম হল না। এরপর থেকে প্রতিদিন সেই মিনারের তলায় দাঁড়িয়ে গান শোনা
তার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেল।
একদিন সে একটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে গান শুনছে, তখন সে
দেখল ডাইনি বুড়িকে আসতে। তারপর ডাইনি বুড়ি এসে মিনারের তলায় দাঁড়াল আর বলল—
‘উপরে উঠব আমি রূপসী রুপাঞ্জেল
তাড়াতাড়ি মাথার থেকে চুলগুলি ফেল’।
রাজপুত্র দেখল সোনালি চুলের গোছা উপর থেকে নেমে এল আর
তাই দড়ির মত ধরে ডাইনী উপরে উঠে গেল। রাজপুত্র বুঝতে পারল এটা সেই দড়ি যা দিয়ে
উপরে ওঠা যায়। সে বার বার আওড়ে ছড়াটা মুখস্ত করে ফেলল।
পরদিন মিনারে পৌঁছে রাজপুত্র যখন বুঝতে পারল চারপাশে কেউ
নেই। ডাইনির আসার সম্ভবনা নেই। তখন সে মিনারের তলায় গিয়ে বলল –
‘উপরে উঠব আমি রূপসী রুপাঞ্জেল
তাড়াতাড়ি মাথার থেকে চুলগুলি ফেল’।
তা মাথা থেকে চুলের গোছা নিচে নেমে এল। আর রাজপুত্র সে
চুলের গোছা বেয়ে সোজা উপরে। রাজকন্যা তো ডাইনীকে না দেখে অন্য মানুষ দেখে প্রথমে
খুব ভয় পেয়ে যায়। কারণ সে এর আগে ডাইনিকে ছাড়া অন্য কোন মানুষ দেখেনি।
তার গান শোনার জন্য রাজপুত্র মিনারের তলায় দিনের পর দিন
কাটিয়েছে শুনে রুপাঞ্জেলের হৃদয় গলল। তারপর যখন রাজপুত্র জানতে চাইল রুপাঞ্জেল
তাকে বিয়ে করবে কিনা তখন সে দেখল রাজপুত্র সুন্দর দেখতে একজন যুবক। সে রাজি হয়ে
গেল। বলল –ওই বুড়িটার চেয়ে যে কেউই ভাল। তুমি তো স্বর্গের দেবতা। সে রাজপুত্রের
হাতে হাত রাখল।
0 Reviews