Read more
সৎমা তো লোকটির মেয়ের উপর আরো রেগে গেল।
তাকে আরো বেশি করে শাস্তি ও কম করে খাবার দিতে লাগল। কিন্তু মেয়েটি দিন দিন আরো
সুন্দর হতে লাগল। তারপর একদিন খুব রেগে গিয়ে বেশ খানিকটা টান সুতো গরম জলে ফুটিয়ে
সৎমেয়ের গায়ে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, ওই কুড়ালটা নাও। বরফ জমা পুকুর কেটে গর্ত করে মাঝ
ধরে নিয়ে এস।
মেয়ে আর কি করে। সে সেই বরফ জমা পুকুরে এসে
গর্ত করার জন্য বরফ কাটতে লাগল। সেই সময় এগিয়ে আসছিল এক জাঁকজমকপূর্ণ রথ। রথে
বসেছিলেন দেশের রাজা। পুকুরের ধারে মেয়েটিকে দেখে তিনি রথ থামালেন। তারপর জিজ্ঞাসা
করলেন আহা বাছারে, তুমি কে? এই ঠান্ডায় তুমি এখানে টোন সুতো আর কুড়ুল নিয়ে কি করছ।
--আমি একজন গরীব মেয়ে। সৎমায়ের আদেশে
পুকুরের বরফে গর্ত খুঁড়ছি। এরপর টোন সুতো দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যেতে হবে। মেয়েটি
বিনয়ের সাথে রাজাকে বলল।
রাজা দেখলেন মেয়েটি আশ্চর্য রকম সুন্দরী।
তাঁর মনও করুণায় ভরে গেল। তিনি বললেন তুমি কি আমার সাথে যাবে?
--নিশ্চয়ই, আনন্দের সঙ্গেই যাব। আসলে মেয়েটি
তার সৎমা ও সৎবোনের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যেতে চাইছিল।
এবার রাজা হাত বাড়িয়ে রথে তুলে নিলেন। রথ
এসে থামল রাজপ্রাসাদে। তারপর এক শুভদিনে রাজার সাথে ধুমধাম করে তার বিয়েও হয়ে গেল।
তৃতীয় বামনের দেওয়া বরও ফলে গেল।
এরপর তার এক ছেলে হল। সৎমা তার সৌভাগ্যের
কথা শুনে মেয়েকে নিয়ে প্রাসাদে এসে হাজির। এমন হাবভাব দেখাতে লাগল যে মেয়ের
অনেকদিন দেখা না পেয়ে সে কষ্ট পাচ্ছিল তাই মেয়েকে দেখতে এসেছে।
তারপর একদিন রাজা রাজকার্যে বাইরে গেছেন।
দাসদাসীরাও কাছাকাছি কেউ ছিল না তখন সৎমা মেয়েটির মাথাটা চেপে ধরল আর তার মেয়ে ধরল
পা দুটি। এভাবে তাকে দোলাতে দোলাতে জানলা দিয়ে প্রাসাদের জানলাদিয়ে প্রাসাদের পাশ
দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারপর নিজের কুৎসিত মেয়েকে রানির বিছানায়
শুইয়ে দামী চাদর দিয়ে তার মাথা পর্যন্ত ঢেকে দিল। রাজা ফিরে এসে যখন রানির সাথে
কথা বলতে গেলেন তখন দুষ্টু সেই সৎমা বলল আস্তে আস্তে কথা বলুন, ওর কাছে গিয়ে ঘুম
ভাঙাবেন না। অসুস্থ অবস্থায় আজ বেশ ভালই ঘুমোচ্ছে। আজকের মতো ওকে ঘুমোতে দিন।
রাজার মনে কোন রকম কু-চিন্তা উঁকি দিল না।
পরদিন যখন তিনি রানীর সাথে আবার কথা বলতে এলেন তখন তার উত্তরে সৎবোন উত্তর দেওয়ায়
সেখান থেকে লাফিয়ে বেরোতে লাগল কোলা ব্যাঙ। রাজাতো অবাক। সোনার মোহরের বদলে
কোলাব্যাঙ। এটা কি করে হয়। তাঁর প্রশ্নের উত্তরে সৎমা বললেন, অসুস্থতার জন্য ও রকম
হচ্ছে। দুর্বলতা কেটে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু রাতে রানীর খাস দাসী দেখল একটি সাদা
ধবধবে হাঁস প্রাসাদের নদীতে সাঁতার কাটছে। হাঁসটি তাকে দেখেই বলল –
রাজামশায় রাজামশায় করছ
তুমি কি?
0 Reviews